কিডনি বিকল হলে বুঝার উপায় কী?

কিডনি বিকল হলে বুঝার উপায় কী?

কিডনি আমাদের শরীরের দুটি মুখ্য অঙ্গ যা পেটের পেছনের দিকে মেরুদণ্ডের দু'পাশে অবস্থিত। কিডনি আমাদের শরীরের রক্ত পরিশোধন করে এবং বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি, ওষুধ, এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

 

কিডনির প্রধান কাজগুলি হল:

 

রক্ত পরিশোধন: কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি, ওষুধ, এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। এই বর্জ্য পদার্থগুলি মূত্র হিসাবে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে।

ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা: কিডনি শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, এবং ফসফেট এর মতো ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: কিডনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

হাড়ের স্বাস্থ্য: কিডনি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরি করে।

লাল রক্ত কণিকা তৈরিতে সহায়তা: কিডনি লাল রক্ত কণিকা তৈরিতে সহায়তা করে।

 

কিডনি কীভাবে কাজ করে:

 

কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি, ওষুধ, এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

 

কিডনি ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয়:

 

পর্যাপ্ত পানি পান করা: প্রতিদিন 8-10 গ্লাস পানি পান করা কিডনির সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজন।

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া কিডনির উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম করা কিডনির সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজন।

ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান কিডনির ক্ষতি করতে পারে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে।

 

কিডনি বিকল হওয়াঃ

 

কিডনি বিকল বলতে বোঝায় কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পেয়ে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।

কিডনি বিকলের কারণ: দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ (CKD): ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর, প্রোস্টেট সমস্যা, কিডনি সংক্রমণ, কিডনিতে রক্ত নালীর সমস্যা, কিডনিতে টিউমার, কিছু ঔষধের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার ইত্যাদি।

হঠাৎ কিডনির ক্ষতি: তীব্র ডিহাইড্রেশন, রক্তক্ষরণ, সংক্রমণ, বিষক্রিয়া, কিডনিতে আঘাত, কিছু ঔষধের প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি।

 

কিডনি বিকলের লক্ষণ:

 

প্রস্রাবে পরিবর্তন: প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া প্রস্রাবে রক্ত বা ফেনা দেখা রাতে বারবার প্রস্রাব হওয়া

শরীরে ফোলাভাব: পায়ের পাতা, গোড়ালি, হাত, মুখ, চোখের চারপাশে ফোলাভাব

অস্বস্তিকর অনুভূতি: ক্লান্তি দুর্বলতা ক্ষুধামান্দ্য বমি বমি ভাব বমি মাথাব্যথা পেশীতে টান

ঘুমের সমস্যা অন্যান্য লক্ষণ: শরীরে চুলকানি রক্তাল্পতা শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের

ভারসাম্যহীনতা হাড়ের সমস্যা উল্লেখ্য: কিছু ক্ষেত্রে, কিডনি বিকল হওয়া পর্যন্ত কোন লক্ষণ দেখা নাও যেতে পারে। কিডনি বিকলের

 

ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা:

 

  • ডায়াবেটিস রোগী
  • উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি
  • কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তি
  • মূত্রনালীর সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি
  • দীর্ঘদিন ধরে কিছু ঔষধ সেবনকারী ব্যক্তি
  • 60 বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি

আপনার যদি কিডনি বিকলের ঝুঁকি থাকে, তাহলে নিয়মিত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

 

কিডনি বিকলের চিকিৎসা:

 

কিডনি প্রতিস্থাপন: তীব্র কিডনি বিকলের ক্ষেত্রে একমাত্র স্থায়ী সমাধান। ডায়ালাইসিস: কৃত্রিমভাবে রক্ত পরিশোধন করা।

ঔষধ: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ, ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা, সংক্রমণ প্রতিরোধ ইত্যাদি।

জীবনধারা পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ত্যাগ, ওজন নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। কিডনি বিকল

প্রতিরোধ: স্বাস্থ্যকর জীবনধারা: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ত্যাগ, ওজন নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর ইত্যাদির নিয়মিত পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ।

 

কিডনি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা:

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ক্ষেত্রে দ্রুত ও যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ।

মনে রাখবেন: কিডনি বিকল একটি গুরুতর সমস্যা, তবে সঠিক চিকিৎসা ও জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব।

 

কিডনি সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুনঃ বৃক্কা বা কিডনি

ডায়াবেটিস সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুনঃ ডায়াবেটিস কী ও হলে কী করণীয়

More news and event